বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ | ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমি ষড়যন্ত্রের শিকার : পিআইও আবুল কালাম আজাদ`

নিজস্ব প্রতিবেদক : আমি ষড়যন্ত্রের শিকার, আমাকে অসত্য অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। সঠিক তদন্ত ও সুবিচার পেলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হব। এ দাবি করেছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম আজাদ। তিনি পাবনা জেলার সুজানগর থানার হাসামপুর গ্রামের শমসের আলী মিয়ার ছেলে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুদক। ২০২৪ সালের ৮ মে আবুল কালাম আজাদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী জারির আদেশ দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা গত বছরের ৩ জুলাই সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেন।

প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়েছে আবুল কালাম আজাদ ১ কোটি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দ্বিতীয় মামলায় তার স্ত্রী স্ত্রী মর্জিনা খাতুনের সঙ্গে আসামি হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। এ মামলায় ১ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৪৮৩ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর তৃতীয় মামলায় তার ছেলে ফজলে রাব্বি রিয়ন আসামি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ভোগ দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন ১৯৭৯ সালে তার বাবা তাকে নিজ নামীয় শতাধিক বিঘা সম্পত্তি তাকে রেজিষ্ট্রি করে দেন। তারপর থেকে তিনি তা ভোগ দখল করে আসছেন। তিনি জানান বাংলাদেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা গাজনা বিলে তাদের সেসব জমি অবস্থিত। প্রতি বিঘা জমি থেকে কোন কোন বছর এক লাখ টাকার পেঁয়াজও বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি নিজে চাষাবাদ করার পাশাপাশি অনেক জমি তিনি বাৎসরিক লিজ দিয়ে দেন। প্রতি বিঘা ৩০ হাজার টাকা দরে বাৎসরিক লিজ দেয়া হয়ে থাকে। পাঁচ বছর আগে এগুলো প্রতি বিঘা ২০ হাজার টাকা বাৎসরিক লিজ দেওয়া হতো । সে হিসেবে গত ১০ বছরে জমি থেকেই তিনি দুই কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন। তিনি গত ৪৫ বছর ধরে তিনি এককভাবে জমির ভোগ দখল করে আসছেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুষ্টুভাবে হিসেব করলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে। ওই পরিমাণ সম্পত্তি থেকে তার তো আরো বেশি টাকা সঞ্চয় থাকার কথা ছিল। তার সঞ্চয় বরং আরো কম হয়েছে।
সে হিসেবগুলো না করে তার বিরুদ্ধে এক পেশে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তিনি জানান বলা হয়েছে তার তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে কিন্তু আসলে তার মাত্র একটি ফ্ল্যাট রয়েছে যেটি এখনো রেজিস্ট্রি হয়নি। তার ছেলে ও তার স্ত্রীও পৈত্রিক সম্পত্তির লাভের সম্পদ ভোগ করছেন। আর শ্বশুর বাড়ি আপনার শ্যালকের নামে যে সম্পদ রয়েছে সেটি তাদের ব্যক্তিগত এবং তাদের গাড়ি কেনা সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু এর দায় তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তিনি বলেন ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান হিসেবে এবং একজন চাকরিজীবী হিসাবে তার যে সম্পদ সঞ্চয় থাকার কথা বরং তার চেয়ে অনেক কম টাকায় তিনি সঞ্চয় করতে পেরেছেন। তার চাকরির সঞ্চিত সম্পদকে অনৈতিক আয় বা আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যা দুঃখজনক এবং তার জন্য মানহানি কর। তিনি বলেন তিনি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন এবং হচ্ছেন। যদি সঠিকভাবে এবং সুষ্ঠুভাবে হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে এ সম্পদের চাইতেও আরো বেশি সম্পদ তার অর্জিত হওয়ার কথা। তিনি বলেন গত ১৯ বছর ধরে তিনি পিআইও হিসেবে চাকরি করছেন। এর আগে তিনি একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন ১২ বছরের বেশি সময় ধরে। চাকরির বেতন থেকে তার যে সঞ্চিত সম্পদ অর্জিত হয়েছে এটিও পরিকল্পিতভাবে এবং সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে বিচারে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।

শেয়ার করুন: